জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম মূল কারণ হলো বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। শিল্প বিপ্লবের আগে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ছিল মোটামুটি ২৮০ পিপিএম এর আশেপাশে। ২০১৯ সালে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ প্রায় ৪১০ পিপিএম এর কাছাকাছি পৌছে যায়। বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইড সমুদ্রের জলে মিশে কার্বনিক অ্যাসিড তৈরি করে। কাজেই বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ার সাথে সাথে সমুদ্রের জলের পিএইচ কমতে থাকে অর্থাৎ অ্যাসিডিটি বাড়তে থাকে।
কোরাল রিফ পৃথিবীর বিভিন্ন সমুদ্রে দেখা যায় এবং কোরাল রিফ সংলগ্ন অঞ্চলের বায়োডাইভারসিটি অনেকটাই বেশি হয়। এই এক্সপেরিমেন্টে আমরা দেখব সমুদ্রের জলে গেছে এবারে কোরাল রিফ কে কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এই এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য আমাদের লাগবে খানিকটা ভিনিগার এবং দুটি ডিম।
দুটি ফাঁকা গ্লাস নিয়ে একটি একটি করে ডিম রেখে দাও। এবারে একটিতে জল এবং একটিতে ভিনিগার এমনভাবে ঢালো যাতে ডিমটি সম্পূর্ণ নিমজ্জিত থাকে। এই অবস্থাতে ২৪ ঘন্টা রেখে দাও।
এইভাবে একদিন রাখার পরে দুটি ডিমকে তুলে পরীক্ষা করে দেখতো কোনটা কেমন আছে? দেখতে পাবে জলে ডোবানো ডিমটির খুব একটা কোনো পরিবর্তন হয়নি, কিন্তু ভিনিগারে ঢুকানো ডিমের খোসা নেই এবং ডিমটি খানিকটা রবারের মত হয়ে গেছে। কোরাল বা যেকোনো ধরনের শামুক-ঝিনুকের দেহের আবরণ তৈরি হয় ক্যালসিয়াম কার্বনেট দিয়ে যা ডিমের খোসার ও মূল উপাদান। ভিনিগার (অ্যাসিটিক অ্যাসিড) এর সংস্পর্শে আসামাত্র ক্যালসিয়াম কার্বনেট, ক্যালসিয়াম বাই কার্বনেট এবং কার্বন ডাই অক্সাইডে পরিণত হতে থাকে। ভিনিগারে চোবানো ডিমের গায়ে যে বুদবুদ গুলি তোমরা দেখতে পাচ্ছ সেগুলো আসলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের বাবল। এই ক্যালসিয়াম বাই কার্বনেট দ্রবীভূত হয়ে বলে ডিমের খোসা টিকে তোমরা আর দেখতে পাও না। ডিমের খোসার না থাকায় ভিনিগার ডিমের কোষের ভেতরে থাকা প্রোটিন গুলিকে ডি-ন্যাচিয়র করে ফেলে, ফলে ডিমটি রান্না করার মত দেখতে হয়ে যায়।
কোরাল রিফ পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইকোসিস্টেম গুলোর মধ্যে একটি। যদিও কোরাল রিফ সমুদ্রতলের মাত্র ১ শতাংশ জুড়ে থাকে, কিন্তু প্রায় ২৫ শতাংশ মাছের প্রজাতির আশ্রয়স্থল হল এই রিফ। সমুদ্রের এসিডিটি বাড়ার সাথে সাথে কোরালের দেহের স্ট্রাকচার দুর্বল হয়ে যাচ্ছে যা পরবর্তীকালে কোরাল রিফ এর মৃত্যু ডেকে আনছে।