লিখলেন – হেড মাস্টারমশাই পুলক বাবু
সাধারণ টিউবওয়েলগুলি এখন কার্যত: অকেজো! আয়লা পরবর্তীতে যেসমস্ত মার্ক-২ অর্থাৎ ডিপ টিউবওয়েল(বউ কল) বসানো হয়েছিল, সেগুলোও এক এক করে মুখ থুবড়ে পড়ছে!
হাসনাবাদ, খাঁ পুকুর, চক পাটলি, কালীতলা, সামসেরনগরে পানীয় জলস্তর এতটাই নেমে গেছে কয়েক দশকে যে, ২-৩-৪কিমি দূর থেকে পানীয় জল আনতে হয় গ্রামবাসীদের! অন্য পঞ্চায়েত থেকে জল তুলে, সরকারিভাবে কোনোরকমে ওইসব পঞ্চায়েতের গ্রামগুলিতে পানীয় জল পৌঁছে দিয়ে ঠেকা দেওয়া হচ্ছে।
এটা ঠিক যে,বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেবার জন্য সরকারি প্রকল্প চালু হয়েছে বেশ কিছু পঞ্চায়েতে। কিন্তু জলের উৎসটা সেই তো কমছে ভয়ংকরভাবে! মাটির নিচের জল শূণ্য হয়ে যাচ্ছে প্রত্যেকটা দিন!
ভাণ্ডারখালি, মাধবকাটি, রমাপুর,ধানিখালি কাঁকরিয়া-র পাশাপাশি স্যান্ডেলের বিল গ্রাম পঞ্চায়েতেও পানীয় জলস্তর নেমে গিয়ে তীব্র জলের সংকট শুরু হয়েছে।
মাটির নিচের মিষ্টি জল তুলে বোরো ধান চাষের চেষ্টা যত না চলছে, তার বেশি জলের অপচয় ঘটছে। মাটির ৬০০-৭০০ ফুট গভীরেও এখন আর মিষ্টি জল পাওয়া যাচ্ছে না নলকূপগুলিতে।
এরপরেই তীব্র আর্সেনিকের সমস্যায় পড়তে চলেছে হিঙ্গলগঞ্জের বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত।
এক্ষুনি বৃষ্টির জল ধরে রাখার কৌশল শুরু করা না হলে, জলের যথেচ্ছ অপচয় ঠেকাতে না পারলে, জলের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবসায় রাশ না টানলে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে হিঙ্গলগঞ্জের অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতে জলের জন্য হাহাকার রোল উঠবেই!
খাল কেটে নোনা জল ঢুকিয়ে ভেনামি চিঙড়ির হঠাৎ লাভজনক ব্যবসার ফলে, ইতিমধ্যে চাষের জমির এবং মিষ্টি জলাভূমির বড় ক্ষতি হয়ে গেছে সুন্দরবনের অনেকগুলি ব্লকে!
বৃষ্টির জলকে ব্যবহার করার প্রযুক্তিকে হিঙ্গলগঞ্জে র সবকটি গ্রামপঞ্চায়েতে অবিলম্বে শুরু করা দরকার।
পানীয় মিষ্টি জলের উৎসগুলো সংরক্ষণ, বৃষ্টির জলকে চাষে ব্যবহার করা ছাড়া হিঙ্গলগঞ্জ বাঁচবে না!