খবরা খবর

নেপালে দ্বিগুন বাড়লো জঙ্গল

সত্তরের দশকে নেপালে জঙ্গলের পরিমান মাত্রাতিরিক্ত ভাবে কমে গেছিলো। মূলত, জঙ্গল থেকে কাঠ কাটা চলছিল সাংঘাতিক ভাবে এবং জঙ্গল গবাদী পশুর চারণভূমিতে পরিণত হয়ে গেছিল।
১৯৯২ থেকে ২০১৬ অব্দি স্যাটেলাইট ডাটা পরীক্ষা করে দেখা গেছে নেপালে জঙ্গলের পরিমান প্রায় দ্বিগুনের কাছাকাছি বেড়েছে। যেখানে ১৯৯২ সালে ২৬% জঙ্গল ছিল, সেখানে ২০১৬ তে এসে জঙ্গলের পরিমান বেড়ে হয়েছে ৪৬%। কি ভাবে পাল্টেছে? কি এমন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। সেই কারণ খুঁজতে বিজ্ঞানীরা মাঠে নেমে ইন্টারভিউ করেছেন অসংখ্য গ্রামবাসীর।
১৯৯৩ সালে ফরেস্ট এক্ট এর আগে, সরকার মূলত এই জঙ্গল রক্ষনাবেক্ষণ করতো। জঙ্গলের আশেপাশের গ্রামবাসীদের সেই রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ কোন ভূমিকা থাকত না। যথারীতি জঙ্গলের তুলনায় কর্মচারীর সংখ্যা অনেকটাই কম হওয়ায়, আরো অন্যান্য কারণে কোনোভাবেই এই রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকঠাক করে হচ্ছিল না। পরবর্তীকালে আইন করে গ্রামবাসীদের এই রক্ষণাবেক্ষণে যুক্ত করা হয়। যেখানে ফরেস্ট রেঞ্জার স্থানীয় গ্রামবাসীদের সাথে একসাথে বসে ঠিক করে কিভাবে এই জঙ্গলের রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব।
পূর্বপুরুষদের থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান স্থানীয়ভাবে গ্রামবাসীদের জঙ্গল সম্পর্কে অনেক বেশি অভিজ্ঞতা দিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার সঠিকভাবে কাজে লাগানোর ফলে জঙ্গল বাড়ছে। সাসটেনেবেল কনজামশন বলে একটি শব্দ বন্ধ আমাদের পড়ানো হয় কিন্তু তা হাতে-কলমে করিয়ে দেখেছে নেপাল। জঙ্গল থেকে পরিমাণ মতো ফল গো-খাদ্য এবং ঔষধি ঠিকই সংগ্রহ করা হয়েছে, যা স্থানীয় বাজারে বেচে গ্রামবাসীরা উপকৃত হয়েছে। কিন্তু সেটা এতটাই নিখুঁতভাবে করা হয়েছে যাতে জঙ্গলের বিস্তার আটকে না যায়। এর ফলশ্রুতি স্বরূপ নেপাল ৩ দশকের ও কম সময়ে জঙ্গলের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ করতে পেরেছে।
জঙ্গলের অধিকার গ্রাম সভা বা গ্রামবাসীদের দেওয়া পাল্টে ফেলতে পারে পুরো বাস্তুতন্ত্র। এখন দেখার আমরা কবে এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে পারব।

Leave a Comment