বন্ধুদের লেখা

বাড়িতে সোলার আনুন, লাভে থাকুন, পরিবেশের সাথে থাকুন।

বাড়িতে সোলার আনুন, লাভে থাকুন, পরিবেশের সাথে থাকুন।

কলমেঃ সৌম্যদীপ মিত্র

লেখক পরিচিতিঃ

সৌম্যদীপ মিত্র বর্তমানে সোলার এনার্জি নিয়ে গবেষণা করছেন কলকাতা বিশববিদ্যালয়ে। তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, কলকাতা থেকে ফিজিক্স নিয়ে মাস্টার্স   করেছেন।

—————————————————————————————————————–

আগামী কিছু বছরের মধ্যেই কয়লা, পেট্রোলিয়াম, তেল ও গ্যাস শেষ হয়ে যাবে বলে বিজ্ঞানীদের মতামত যেগুলো এতদিন ধরে বিভিন্ন শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে আমাদের ‘উন্নত’ জীবনযাত্রা এবং বাড়তে থাকায় জনসংখ্যার জন্য তড়িৎ শক্তি বা ইলেকট্রিসিটি সহ অন্যান্য শক্তির চাহিদা বাড়ছে। বিকল্প অপ্রচলিত শক্তি যেমন সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জলশক্তি এই চাহিদা মেটাতে পারে। সৌর কোষ বা সোলার সেল দৈনন্দিন জীবনে তড়িৎ শক্তির চাহিদা পূরণের জন্য সবথেকে উপযোগী।

যে অঞ্চলে বেশি লোডশেডিং হয়, সেই অঞ্চলে অফ গ্রিড সোলার সিস্টেম ব্যবহার করাই শ্রেয়। অফ গ্রিড সিস্টেমে সোলার প্যানেলের সাথে ব্যাটারি জোড়া থাকে। সাধারণত ৪ থেকে ৫ জন সদস্যযুক্ত একতলা/দোতলা বাড়িতে (এয়ারকন্ডিশন ছাড়া) ১ কিলো ওয়াট এর সোলার সিস্টেম যথেষ্ট। বর্তমান বাজারে এতে ৮০ হাজার টাকার কাছাকাছি খরচা হয় এবং কুড়ি থেকে পঁচিশ বছরের জন্য আর বিশেষ কোনো খরচ হয় না। এক কিলো ওয়াট সোলার সিস্টেম দিনে ৪-৫ ইউনিট ইলেকট্রিসিটি তৈরি করতে পারে।

এই সিস্টেমের জন্য প্রয়োজন:

ক) ১কিলোওয়াট সোলার প্যানেল (২৫০০০ টাকা)
খ) ১৫০ অ্যাম্পিয়ার আওয়ার এর দুটি সোলার ব্যাটারি (৩২০০০ টাকা)
গ) সোলার ইনভার্টার (২৪ ভোল্ট/১৩০০ ভোল্ট অ্যাম্পিয়ার) – ১ কিলোওয়াট (৭০০০ টাকা)
ঘ) সোলার স্ট্রাকচার (৫০০০ টাকা)
ঙ) ac/dc তার, জংসান বক্স, আর্থিং ফিটিং টুল, লাইটনিং আরেস্টার।

সোলার সিস্টেম সেট করবার জন্য অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানকে দায়িত্ব দেওয়াই ভালো। শহরতলীর যে সমস্ত জায়গায় লোডশেডিং কম হয় সেখানে অন গ্রিড সোলার সিস্টেম লাগানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যাটারি কিনতে হয় না তার বদলে নেট মিটার লাগাতে হয়। উভয় ক্ষেত্রেই সরকারের তরফে বিভিন্ন ভর্তুকি এবং নিয়ম আছে।

গরমকালের ইলেকট্রিসিটি বিল ইউনিট অনুযায়ী সোলার সিস্টেম লাগানো উচিত। ধরা যাক তিন মাসে কোন বাড়িতে ৪০০ ইউনিট রিডিং এসেছে। অর্থাৎ, সেই বাড়িতে একদিনে ৪.৫ ইউনিট কারেন্ট ব্যবহার হয়েছে। এইরকম বাড়িতে এক কিলো ওয়াট সোলার সিস্টেম যথেষ্ট। এর দ্বিগুণ কারেন্ট ব্যবহার হলে দুই কিলো ওয়াট সোলার সিস্টেম সেট করতে হবে। তবে ২ কিলোওয়াট এর বেশি সোলার সিস্টেম লাগাতে গেলে পিসিইউ প্রয়োজন হয়। কোন বাড়িতে হাফ হর্সপাওয়ারের জল তোলার মোটর পাম্প লাগলে এক কিলো ওয়াট সোলার সিস্টেম ব্যবহৃত হয়।

বাড়িতে নয়, পনেরো বা কুড়ি ওয়াটের এলইডি লাইট এবং কুড়ি ওয়াট এর টিউব লাইট ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ অনেকটাই সাশ্রয় হয়। এই গুলি সোলার প্যানেলের ক্ষেত্রে যথেষ্ট উপযোগী। যদি একসাথে সব কিছু সোলার নাও করতে চান সে ক্ষেত্রে বাড়ির কিছু কানেকশন সোলার করার কথা ভাবতে পারেন। তারপরে ধীরে ধীরে এগোতে পারেন।

বলে রাখা ভালো, বাড়ির ছাদে মাত্র ৮০ বর্গফুট জায়গা ১ কিলো ওয়াট সোলার প্যানেল ইনস্টল করবার জন্য যথেষ্ট। ব্যাটারি এবং প্যানেলের যে কম্বিনেশন আমি বললাম তাতে পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সাধারণত চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা রোদ পেলেই ব্যাটারি একদিনের ব্যবহারের জন্য চার্জ হয়ে যায়।

1 Comment

  • গ্রীড কানেক্টেড সোলার সিস্টেম (৩ কিলো ওয়াট ) বসাবার জন্য all inclusive ( including installation) কত খরচ পড়তে পারে? smart meter বসিয়ে উদ্বৃত্ত্ব বিদ্যুৎ export করা কি সম্ভব?

Leave a Comment