কলমে : অভ্র চক্রবর্তী
সবুজ বিপ্লবের সময় IR ভ্যারাইটির ধানগুলি থেকে বেশি ফলন পাবার জন্য প্রচুর পরিমানে রাসায়নিক সারের (যাদের মধ্যে নাইট্রোজেন অন্যতম) ব্যবহার শুরু হয়। অধিক নাইট্রোজেন সারের ব্যবহারের ফলে ধানের সিলিকন শোষন করার ক্ষমতা ব্যাহত হয় (Savant et al. 1996), সিলিকার অভাবে ধানের কান্ডের দৃঢ়তা কমেযায়, ঝলসা রোগের (Rice Blast) বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে(Kaufman 1985, Currie and Perry 2007) নাইট্রোজেন সার ধানের দেহরসে দ্রবনীয় প্রোটিনের পরিমান বৃদ্ধি করে, সিলিকন শোষন ব্যাহত করে কান্ডকে দুর্বল করে, এই সকল কারনে ধানগাছ সহজেই রোগ, পোকা বা প্রতিকুল আবহাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়,মাজরা জাতীয় কান্ডে ছিদ্রকারি পোকার ও শোষক পোকার উপদ্রব বাড়ে (Yoshida 1975, Yoshida 1981, Bandong et al. 2005, Rashid et al. 2016)।
এছাড়া নাইট্রোজেন সার বাদামী শোষক পোকার প্রাকৃতিক শত্রুদের দুর্বল করে দেয় (Zhu P et al 2020), এবং শোষক পোকার বাস্তুতান্ত্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে (Lu et al 2004, Rashid et al. 2017)। নাইট্রোজেন সার ব্যবহার বৃদ্ধির কারনেই ১৯৭০ আর ৮০র দশকে বাদামী শোষকের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছিলো (Dyck et al, 1979; Heinrichs and Mochida, 1984)। সাধারনভাবে দেখা গেছে নাইট্রোজেন সার ব্যবহার বাড়লে সামগ্রিকভাবে উদ্ভিদভোজি পতঙ্গের খাদ্যের প্রতি আসক্তি, খাদ্য গ্রহনের পরিমান, টিকে থাকার ক্ষমতা, বৃদ্ধি, প্রজনন হার, এবং জন ঘনত্ব (Population Density) বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘদিন ধরে প্রচুর নাইট্রোজেন সারের ব্যবহারের ফলে এশিয়ার বিভিন্ন অংশে শোষক পোকা (Nilaparvata lugens and Sogatella furcifera), পাতামোরা পোকা (Cnaphalocrocis medinalis), মাজরা জাতীয় কান্ডে ছিদ্রকারি পোকার (Scirpophaga incertulas, Chilo suppressalis, S. innotata, C. polychrysus and Sesamia inferens) বিপুল বাড়বাড়ন্ত হয়েছে (Lu 2007)।