টুকিটাকি

আগ্নেয়গিরির সাথে তাপমাত্রার সম্পর্ক

আগ্নেয়গিরির সাথে তাপমত্রার সম্পর্ক

আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত পৃথিবীর তাপমাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে কারণ আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ বা অগ্নুৎপাতের সময় বায়ুমণ্ডলে নানাবিধ গ্যাস এবং ধূলিকণা নির্গত হয়। এবার প্রশ্ন হল, অগ্নুৎপাতের সময় তো প্রচুর কার্বন ডাই অক্সাইড বেরোয়। তাহলে কি অগ্নুৎপাত বায়ুমণ্ডলকে উষ্ণ করে তোলে?

না, আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণগুলি প্রকৃতপক্ষে গ্রহকে শীতল করে কারণ আগ্নেয়গিরি থেকে উৎপন্ন ধূলিকণা গুলি সূর্যরশ্মিকে মাটিতে পড়তে বাধা দেয়। ফলে তাপমাত্রা বেশ খানিকটা কমে যায়। তাহলে এতটা কার্বন ডাই অক্সাইড? তার কি? আসলে বিজ্ঞানীরা মেপে বলছেন, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকে সারাবছরে যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড বেরোয় তার ১২৫ গুন মানুষ তার কার্যকলাপের ফলে উৎপন্ন করে।

 

সময়টা ১৮১৫, অগ্ন্যুৎপাত শুরু হল ইন্দোনেশিয়ার  মাউন্ট তামবোরায়। গত ১০,০০০ এর মধ্যে এত বিশাল আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ দেখা যায় নি। কিছুদিনের মধ্যেই আগ্নেয়গিরির ধোঁয়া পৌঁছলও সুদূর ইউরোপেও। ১৮১৬ সালকে বলা হয় “যে বছর গ্রীষ্ম আসেনি”। অগ্ন্যুৎপাতের পর, বায়ুমণ্ডল কতটা ঠাণ্ডা হবে আর কত দিন ঠাণ্ডা থাকবে তা নির্ভর করে অগ্ন্যুৎপাতের প্রাবল্যের ওপর। মন দিয়ে নিচের ছবিটা দেখলে বোঝা যাবে যে ১৮৬০ থেকে ২০২০ অব্দই অগ্নুৎপাত হলেই পৃথিবীর তাপমাত্রা কমে গেছে।

তাবোলে যদি তোমরা ভাব যে, আগ্নেয়গিরিগুলিকে খুঁচিয়ে ঘা করে কৃত্রিম উপায়ে যদি অগ্ন্যুৎপাত ঘটানো যায়, তাহলেই গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমে যাবে! কিন্তু ব্যাপারটা এত সহজ নয়। অগ্ন্যুৎপাতের পরে সূর্য রশ্মি মাটিতে কম পৌঁছানোর দরুন ফসলের উৎপাদন সাংঘাতিক ভাবে কমে যায়। সাথে, এই সাংঘাতিক বায়ুদূষণ শরীরের প্রভূত ক্ষতি করে। শুধু তাই না, এই বিপুল পরিমাণ ধূলিকণা নানান প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডেকে আনে। তামবোরার অগ্ন্যুৎপাত শুধুমাত্র ইউরোপেই দুই লাখ মানুষের মৃত্যুর কারন হয়েছিল, সাথে সাথে এসেছিল বন্যা এবং দুর্ভিক্ষ। সারা ইউরোপ জুড়ে খাদয়ের আকাল দেখা গেছল। কাজেই মানুষ এবং জীবজগতের ক্ষতি না করে, জলবায়ু পরিবর্তন থামানো খুব শক্ত।

Leave a Comment