খবরা খবর

প্যারিস এগ্রিমেন্টে ফের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র! প্রতিশ্রুতি দেওয়া সহজ রাখা কঠিন!

প্যারিস এগ্রিমেন্টে ফের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র! প্রতিশ্রুতি দেওয়া সহজ রাখা কঠিন!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে বসার প্রথম দিনেই জো বাইডেন ঘোষণা করলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবার প্যারিস এগ্রিমেন্টে তাদের প্রতিশ্রুতি পালনে যোগদান করবেন। এই খবর পাওয়ার পরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন টুইট করে জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে অভিবাদন জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্যারিস এগ্রিমেন্টে পুনরায় যোগদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা পালন করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এখনো অনেকটা পথ হাঁটতে হবে।

এর আগে ভূতপূর্ব মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় আমেরিকা প্যারিস এগ্রিমেন্ট থেকে বেরিয়ে এসেছিল। তারও আগে কিয়োটো প্রটোকল সই করার কিছুদিনের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের সময়ে আমেরিকা সেই চুক্তিপত্র থেকে বেরিয়ে এসেছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ভূতপূর্ব আমেরিকার প্রেসিডেন্টদের বারবার চুক্তি ভঙ্গ করে বেরিয়ে আসায় আন্তর্জাতিক মহলে আমেরিকার জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন ছিল। প্রেসিডেন্ট বৃটেনের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৩০ দিনের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্যারিস ক্লাইমেট এগ্রিমেন্ট এর ঠিক হওয়া লক্ষ্যমাত্রায় সহমত পোষণ করবে। এই নভেম্বরে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তন মঞ্চে সবারই লক্ষ্য থাকবে ২০৩১ সালে আমেরিকার গ্রীন হাউস গ্যাস কমানোর প্রতিশ্রুতির ওপরে। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো গ্রীন হাউজ গ্যাস কমানোর লক্ষ্যমাত্রা কোন আইনগত চুক্তি নয়, কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা না পূরণ করতে পারলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাহানির আশঙ্কা থাকছে।

নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেন 2050 সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নেট জিরো পৌঁছে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। তার এই লক্ষ্যমাত্রা যদিও অত্যন্ত কঠিন কিন্তু সম্ভব বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা। নেট জিরো কথাটির অর্থ হলো কোন দেশ যতটা পরিমাণ গ্রিন হাউস গ্যাস উৎপাদন করবে ততটাই বাতাস থেকে শোষণ ও করবে।
বাইডেন ২০৩৫ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্ণভাবে অপ্রচলিত শক্তির মাধ্যমে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের বাকি দেশগুলির লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি হাঁটার জন্য এটি যথেষ্ট নয়। যেহেতু প্রতি পাঁচ বছর অন্তর নির্বাচনের ফলে প্রেসিডেন্ট বদলে যেতে পারে এবং তার সাথে সাথে বদলাতে পারে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে একটি দেশের অবস্থানও, কাজেই বাইডেনকে পাঁচ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করতে হবে এবং সেই লক্ষ্যমাত্রায় যাতে যথেষ্ট পরিমাণে কার্বন এমিশন কমে তাও নিশ্চিত করতে হবে।

বারাক ওবামার সময় যখন যুক্তরাষ্ট্র প্যারিস এগ্রিমেন্টে সই করেছিল তখন তারা ২০২৫ সালের মধ্যে ২০০৫ সালের তুলনায় ২৬ থেকে ২৮ শতাংশ গ্রীন হাউজ গ্যাস কমাবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ২০২৫ সালের মধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কোন সম্ভাবনাই অবশ্য দেখা যাচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে অবশ্য ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবদান অনস্বীকার্য। জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে তার উদাসীন মনোভাব আমেরিকার লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেকটা দূরে চলে যাওয়ার কারণ। বাইডেন অবশ্য আমেরিকা বাসিকে বলেছেন যে নেট জিরো করার ফলে আমেরিকাতে লক্ষ্য লক্ষ্য নতুন কাজের সৃষ্টি হবে। উন্নত রাষ্ট্রগুলির উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলিকে জলবায়ু প্রতিরোধ ব্যবস্থা করার জন্য যে বিপুল পরিমাণ অর্থ সাহায্য করার কথা সেই মেয়ে বাইডেন কি বলেন সেটাই এখন দেখার।

Leave a Comment