উপরের হেডিংটি শুনে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এম আই সিক্স এর প্রধান রিচার্ড মোর সম্প্রতি বলেছেন যে তার সংস্থা ইতিমধ্যেই পৃথিবীর বৃহত্তম গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমনকারী দেশগুলির ওপরে কড়া নজর রাখছে। তিনি আরো বলেন যে জলবায়ু পরিবর্তন এই মুহূর্তে তার দেশের এবং পৃথিবীর জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা।
এই প্রসঙ্গে আরেকটু অতীতে গেলে দেখা যাবে প্যারিস এগ্রিমেন্ট ২০১৬ সালে পৃথিবীর ১৯৬ টি দেশের মধ্যে ১৯১ টি দেশের প্রতিনিধিরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদকে মাথায় রেখে গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমন কমানোর প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হয়। সেইখানে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা শিল্প বিপ্লবের তুলনায় ২ ডিগ্রী বেশি যাতে না হয় সেই চেষ্টা করার তাগিদে গ্রীন হাউজ গ্যাস কমানোর প্রয়াস শুরু হয়। যদিও শিল্প বিপ্লবের তুলনায় দেড় ডিগ্রি তাপমাত্রা কমাবার লক্ষ্যমাত্রা পরবর্তীকালে নেওয়া হয় যাতে উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং দ্বীপপুঞ্জ গুলিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে কম করা যায়।
উন্নত দেশগুলি বহু বছর ধরে গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমন করে জলবায়ু পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী করে তুলেছে। এই মুহূর্তে যদি উন্নয়নশীল দেশগুলো একই রকম পদ্ধতিতে, উন্নয়নের তাগিদে, গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমন করতে শুরু করে সে ক্ষেত্রে শেষের সেদিন খুব তাড়াতাড়ি এসে পড়বে। তাই স্থির হয় উন্নত দেশগুলি সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য উন্নয়নশীল দেশ গুলিকে অর্থ সাহায্য করবে। এইভাবে ক্লাইমেট ফিনান্স এবং গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড এর সৃষ্টি হয় যাদের মাধ্যমে উন্নত দেশগুলি থেকে টাকা উন্নয়নশীল দেশগুলিতে আসবে। যদিও বর্তমানে উন্নত দেশগুলির অনেকেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থ দিচ্ছে না।
২০০০ সালের পর থেকে যদি আমরা গ্রিন হাউস গ্যাসের দেশ অনুযায়ী উৎপাদন দেখি সে ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাবো চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, রাশিয়ার পাশাপাশি ভারতবর্ষও এই মুহূর্তে উৎপাদনের অন্যতম উৎস। যদিও জনসংখ্যা অত্যধিক হওয়ার কারণে ভারতবর্ষ আমেরিকা-ইউরোপের তুলনায় মাথাপিছু অনেক কম গ্রীন হাউজ গ্যাস উৎপাদন করে।
প্যারিস এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী ভারতবর্ষ, চীন, ইউরোপ, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ গ্রীন হাউজ গ্যাস কমাবার বিশাল বড় লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে। জেমস বন্ডের উত্তরসূরিরা বিভিন্ন দেশের গ্রীন হাউজ গ্যাস কমাবার এই বিশাল লক্ষ্যমাত্রা সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কিনা তা দেখবে বলে জানা গিয়েছে। যদিও তারা কি উপায়ে এই তথ্য সংগ্রহ করবে তা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্ট এজেন্সির মত গুরুত্বপূর্ণ একটি সংস্থার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি নজর ঘোড়া থেকে সহজেই অনুমান করা যায় গোটা বিশ্ব জুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন রাষ্ট্রনেতাদের কতটা চিন্তার মধ্যে ফেলেছে।