টুকিটাকি

সারা পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা মাপা হয় কি ভাবে?

সারা পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা মাপা হয় কি ভাবে

জলবায়ু পরিবর্তনের যেকোনো প্রবন্ধের প্রথম উক্তিটি সম্ভবত এই ভাবে শুরু হয় যে “পৃথিবীর তাপমাত্রা অমুক সালের তুলনায় এত গুন বেড়ে গেছে”।  পৃথিবীর তাপমাত্রা – এটা একটা অত্যন্ত মজাদার একটা কথা যা শুনলেই মনে হয় কোটি কোটি লোক মাঠে ঘাটে পাহাড়ে সমুদ্রে থার্মোমিটার নিয়ে নেমে পড়েছে। আচ্ছা ধরে নিলাম কোটি কোটি লোক নেমে পড়েছে। মুস্কিল হল, শুধু নামলেই তো হল না, একেক জনের কাছে একেক কোম্পানির থার্মোমিটার, কেউ থার্মোমিটার রেখেছে হাঁটুর কাছে কেউ আবার মাথার ওপর ধরে বসেছে (উচ্ছতা বাড়লে কমলে তাপমাত্রাও বাড়বে কমবে), কেউ খুব মনোযোগ দিয়ে প্রতি মিনিটে তাপমাত্রা দেখছে আর খাতায় টুকছে কিন্তু মনোজ দাজু দেখতে দেখতে ঘণ্টাখানেক করে ঘুমিয়ে নিচ্ছে আর ঘুম থেকে উঠে চোখ কছলে এদিক ওদিক তাকিয়ে লিখে নিচ্ছে। এই কোটি কোটি লোকের কেউ টেক্সাসে কেউ ব্যাবিলনে কেউ সিসিলিতে কেউ বাগদাদে কেউ আবার কলকাতায় বা মেদিনিপুরে। তাহলে এই কোটি কোটি তাপমাত্রাকে একটা মাত্র সংখ্যাতে আনা হয় কি করে। যেমন বলি যে, ২০১৭ সালে পৃথিবীর তাপমাত্রা ছিল ১৪.৯° সেলসিয়াস এবং তা ১৯৫১-১৯৮০ সালের গড় তাপমাত্রার থেকে ০.৯° সেলসিয়াস বেশি।

প্রথমে বলি, কোটি কোটি লোক তো নেই, কিন্তু সমস্যা গুলো ঠিকই আছে। কোটি কোটি লোকের জায়গায় আছে হাজার হাজার আবহাওয়া দপ্তরের স্টেশন যেখানে তাপমাত্রা, আদ্রতা, বাতাসের গতি ইত্যাদি মাপা হয়। কিন্তু এই অফিসগুলি সব জায়গায় নেই; যেমন সেন্ট্রাল এশিয়া, যেমন আফ্রিকা আর অস্ট্রেলিয়ার বিশাল একটা অংশ, যেমন আন্টারটিকা। এই জায়গাগুলির জন্য আছে স্যাটেলাইট যা কিনা আকাশে থেকে পৃথিবীর সর্বত্র অংশের তাপমাত্রা এবং অন্যান্য সূচকের সম্পর্কে আমাদের জানিয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীকে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চৌকো বাক্সতে ভাগ করা হয় এবং এই প্রত্যেকটি বাক্সে থাকা আবহাওয়া স্টেশন বা স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত তাপমাত্রাকে গড় করে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

ছবিঃ theconversation.com

Leave a Comment